বিশেষ প্রতিবেদন,কলকাতা:রবিবার শেষ ২৪ ঘণ্টায় পশ্চিমবাংলায় নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ৪১৪ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে কলকাতার রয়েছেন ১২৬ জন। রাজ্যের মেডিক্যাল বুলেটিন থেকে এই তথ্য পাওয়া গিয়েছে। যদিও রাজ্যে শেষ ২৪ ঘণ্টায় মোট যতজন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, তার চেয়ে বেশি রয়েছে করোনা–মুক্তের সংখ্যা। এদিন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৪৩২ জন। অর্থাৎ, করোনা সংক্রমিত চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা কমেছে ১৮ জন। কলকাতার ক্ষেত্রেও ছবিটা একই। এদিন মহানগরীতে ১২৬ জন নতুন করে সংক্রমিত হলেও সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ২০১ জন। ফলে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট ৮ হাজার ২৯৭ জন করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। রাজ্যে সুস্থ হওয়ার হার ৫৯.৪৯ শতাংশ।
স্বভাবতই এই করোনা–তথ্যে আশার আলোই দেখছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। যদি এ ভাবে সুস্থ হয়ে ওঠার হার ক্রমশ বাড়তে থাকে, তা হলে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই করোনা সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব হবে না বলে তাঁদের ধারণা। তবে বিষয়টি অনেকটাই নির্ভর করছে নাগরিকদের সচেতনতার ওপর। যদিও কোভিড–১৯ ভাইরাস নিয়ে নাগরিকদের সচেতনার প্রমাণ এখনও সে ভাবে পাওয়া যায়নি বলেই তাঁরা মনে করছেন। এদিন বুলেটিন থেকে করোনা সংক্রমণ নিয়ে যে সব তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, শেষ ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা সংক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। ফলে রাজ্যে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৫৫ জন। এদিন রাজ্যে যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ৬ জন কলকাতার। ফলে এখনও পর্যন্ত কলকাতায় করোনার বলি হয়েছেন ৩২৯ জন।
পশ্চিমবাংলায় মোট করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৯৪৫ জন। এখন করোনা সংক্রমিত অবস্থায় রাজ্যে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫ হাজার ৯৩ জন। রাজ্যে নতুন করে যে ৪১৪ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে কলকাতাই রয়েছে প্রথম স্থানে। এর পর রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা এবং হাওড়া। তবে উত্তরবঙ্গের অবস্থা তেমন একটা সুবিধের নয় বলেই স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন। এদিন দার্জিলিংয়ে নতুন করে ২৪ জন এবং আলিপুরদুয়ারে ২৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন। পরিস্থিতি বিবেচনা করে দার্জিলিং জেলা প্রশাসন ৩টি নতুন কোভিড হাসপাতাল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৪ লক্ষ ১ হাজার ৪৯১টি স্যাম্পল টেস্ট হয়েছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় টেস্ট হয়েছে ১০ হাজার ৫৪৯টি।
এদিকে, মালদার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকেরই করোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শনিবার তাঁর লালারসের পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ফলে গোটা জেলা জুড়েই আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের আধিকারিকরাও বিষয়টি নিয়ে কিছুটা চিন্তিত। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন, তাঁদের খুঁজে বের করতে তৎপর হয়েছেন তাঁরা। এর ফলে মালদা জেলায় মোট ২ জন শীর্ষ স্বাস্থ্যকর্তা করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হলেন। এর আগে শুক্রবার জেলার এক উপমুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সংক্রমণ ধরা পড়ে। নতুন সংক্রমিত মালদার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে। এখন বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন।
পাশাপাশি আলিপুরদুয়ারেও করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। শেষ ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৪ জন আক্রান্ত হওয়ায় করোনা পজিটিভের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭৬ জন। যদিও রবিবারের তুলনায় শনিবার সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল বেশি। শনিবার সংক্রমিত হয়েছিলেন ৪৬ জন। শনিবার পর্যন্ত মোট সংক্রমিত ছিলেন ১৫২ জন। তিনদিন আগেই জেলায় করোনা পজিটিভের সংখ্যা ১০০ পেরিয়ে যায়।